সাহায্য প্রয়োজন?
       ডিউটি অফিসার
: ০১৭৪৫৭৭৪৪৮৭, ০২-৪৮১১৮৫৪২
হটলাইন: ০১৩২০-০৪২০৮৫
ইমেইল
: vsc.dmp@dmp.gov.bd

মায়া (০৫)

 

বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়ে মায়া। কোন কথা কাউকে বোঝাতে পারেনা। নিজেও অন্যের কথা বুঝতে পারেনা। ফলে ঠিকানা অজ্ঞাত, পল্লবী এলাকার থেকে পেয়ে থানা পুলিশ ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে দিয়ে যায়। নিজের নামটি কোনমতে বুঝাতে পারলো যে তার নাম মায়া। ঠিক যেন মায়া ভরা মুখ। মাঝে মাঝেই কুকঁড়ে কুকঁড়ে কান্না করে। বাড়ি ফিরে যেতে চায়। কিন্তু কিভাবে তার বাড়ীর খোঁজ পাবো সে তো কিছুই বলতে পারেনা। সাহায্য নিলাম এসডিএসএল সংস্থার ফরহাদ ভাইয়ের। তিনি ও তার এক সহকর্মী মায়ার সাথে ইশারা ভাষায় কথা বলেন। দু’ দিন পল্লবী থানা এলাকায় ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের এস আই সহ ঘুরিয়ে আসেন কিন্তু তাতেও কোথাও তার পরিবারের খোঁজ পাওয়া যায়নি। তাকে নিয়ে হারানো বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ ও দৈনিক ইত্তেফাকে। এভাবে দীর্ঘ ১৬ দিন পর মায়ার গ্রামের বাড়ি রংপুরের এক পরিচিত লোক ইত্তেফাকে তার ছবি দেখতে পেয়ে মিরপুরে তার বাবাকে ফোন করে জানায়। অতপর তার বাবা-মা, ভাই এসে মায়াকে নিয়ে যায়। মায়া ফিরে পায় বাবা-মার কোল। খুব কষ্ট হয়েছে মায়াকে বাবা-মার কাছে পৌঁছে দিতে। কতজনকে কতভাবে কত অনুনয়, অনুরোধ করতে হয়েছে। কিন্তু সব কষ্টই শেষ পর্যন্ত স্বার্থক হয়ে ওঠে যখন মায়াকে তার প্রকৃত অভিভাবকের কাছে ফিরিয়ে দিতে পেরেছি। মায়ার মা-বাবা আবেগে আপ্লুত হয়ে বারবার বলছিলেন এখানে অর্থাৎ ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে যারা কাজ করেন তাদেরকে আল্লাহ কখনো বিপদে ফেলবেন না।বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়ে মায়া। কোন কথা কাউকে বোঝাতে পারেনা। নিজেও অন্যের কথা বুঝতে পারেনা। ফলে ঠিকানা অজ্ঞাত, পল্লবী এলাকার থেকে পেয়ে থানা পুলিশ ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে দিয়ে যায়। নিজের নামটি কোনমতে বুঝাতে পারলো যে তার নাম মায়া। ঠিক যেন মায়া ভরা মুখ। মাঝে মাঝেই কুকঁড়ে কুকঁড়ে কান্না করে। বাড়ি ফিরে যেতে চায়। কিন্তু কিভাবে তার বাড়ীর খোঁজ পাবো সে তো কিছুই বলতে পারেনা। সাহায্য নিলাম এসডিএসএল সংস্থার ফরহাদ ভাইয়ের। তিনি ও তার এক সহকর্মী মায়ার সাথে ইশারা ভাষায় কথা বলেন। দু’ দিন পল্লবী থানা এলাকায় ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের এস আই সহ ঘুরিয়ে আসেন কিন্তু তাতেও কোথাও তার পরিবারের খোঁজ পাওয়া যায়নি। তাকে নিয়ে হারানো বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ ও দৈনিক ইত্তেফাকে। এভাবে দীর্ঘ ১৬ দিন পর মায়ার গ্রামের বাড়ি রংপুরের এক পরিচিত লোক ইত্তেফাকে তার ছবি দেখতে পেয়ে মিরপুরে তার বাবাকে ফোন করে জানায়। অতপর তার বাবা-মা, ভাই এসে মায়াকে নিয়ে যায়। মায়া ফিরে পায় বাবা-মার কোল। খুব কষ্ট হয়েছে মায়াকে বাবা-মার কাছে পৌঁছে দিতে। কতজনকে কতভাবে কত অনুনয়, অনুরোধ করতে হয়েছে। কিন্তু সব কষ্টই শেষ পর্যন্ত স্বার্থক হয়ে ওঠে যখন মায়াকে তার প্রকৃত অভিভাবকের কাছে ফিরিয়ে দিতে পেরেছি। মায়ার মা-বাবা আবেগে আপ্লুত হয়ে বারবার বলছিলেন এখানে অর্থাৎ ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে যারা কাজ করেন তাদেরকে আল্লাহ কখনো বিপদে ফেলবেন না।
সিলেটের হবিগঞ্জের এক অজপাড়া গায়ে আছিয়ার বাড়ী। বাড়িতে তেমন কেউ নেই, এক ভাই আছে তাও অশিক্ষিত সহজ সরল মানুষ। কাজের সন্ধানে এক আতীœয়ের বাসায় ঢাকায় আসেন আছিয়া। সংসার নেই, বাড়ীতে কেই নেই দেখার মতো, তেমন কেউ না থাকায় তিনি ঢাকার এক বাসায় কাজ করতে থাকেন দিনের পর দিন। যখন কাজ করতে আসেন আছিয়া তখন তিনি বৃদ্ধা ছিলেন না বরং মধ্যবয়স্কা নারী। আজ প্রায় দীর্ঘ ১০(দশ) বছর ধরে একই বাড়ীতে কাজ করে আসছেন আছিয়া। এখন আগের মত এত দ্রুত কাজ করতে পারেন না। গৃহকর্তা ভালো হলেও গৃহকর্তী মাঝে মাঝে খড়গ চালান আছিয়ার উপর। একদিন রাগের মাথায় গৃহকর্তী স্টীলের বড় চামচ দিয়ে আছিয়ার চোখে আঘাত করে। আছিয়া তার চোখে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করেন। ভয়ে কুঁকড়ে উঠে তার মন। কাউকে কিছু বলতে পারেন না। ব্যথায় ব্যথায় দিন পার করেন আছিয়া । গৃহকর্তাকে একথা জানাননি আছিয়া। নিয়তির কি অমোঘ সত্য পরের মানুষ কখনোই আপন হয় না। তা না হলে ১০(দশ) বছর থাকার পরও গৃহকর্তী তাকে পরিবারের কেউ ভাবতে পারেনি। শুধু একদিন নয় তার দুই এক দিন পরই আবার কোন কাজ করা না করা নিয়ে আছিয়ার সাথে ঝগড়া শুরু করেন গৃহকর্তী এবং এক পর্যায়ে সিরামিকের ভারী প্লেট দিয়ে আবারো চোখে আঘাত করে সজোরে। এবার আছিয়ার জ্ঞান হারানোর মতো অবস্থা, চোখের চারপাশে রক্ত। তার চোখে যেন রাজ্যের অন্ধকার নেমে আসছে। আর সহ্য করতে পারলেন না তাই চিৎকার করে কান্না শুরু করেন। কিন্তু তার কান্না, বুকভরা দুঃখের দীর্ঘশ্বাস যেন বাড়ীর কারো কানে পৌঁছায় না। বাড়ীতে থাকা অন্য আরেকটি কাজের মেয়ে তার চোখের খানিকটা যতœ করে কেবল। এত কষ্ট আর বুকে চেপে রাখতে পারেননা আছিয়া। অঝোরে কান্না হয়ে ঝড়ে তার কষ্ট। একদিন পাশের বাসার কেউ তার কান্না শুনতে পায়। উপয়ান্তর না দেখে ঐ প্রতিবেশী এক মানবাধিকার সংস্থার সাথে যোগাযোগ করে। এই সংস্থা ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের নারী পুলিশের সহায়তায় আছিয়াকে ঐ বাড়ী থেকে উদ্ধার করে। ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে আশ্রয় নেয় আছিয়া। ডিসি মহোদয়ের নির্দেশে সহকারী পুলিশ কমিশনার, ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার আছিয়ার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু ততদিনে আছিয়ার চোখের  আলো যে চিরতরে নিভে যাওয়ার পথে। কানেও কম শুনতে পায় আছিয়া। এই অবস্থায় আছিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ইসলামিয়া চক্ষু ইনস্টিটিউডে চিকিৎসা করানো হয়। চিকিৎসা শেষে কিছুটা ভালো হলে তার ভাইয়ের কাছে সিলেটে পাঠানো হয়। তার সঙ্গে থাকা টাকা-পয়সা সহ তার গৃহকর্তার কাছ থেকে নেওয়া ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেওয়া হয়। আছিয়ার ভাই এবং ঐ এলাকার মেম্বারের সাথে খোঁজ নিয়ে জানা যায় আছিয়া এখন ভালো আছেন। আছিয়ার ছোট ভাই তার বেতনের টাকা দিয়ে ছোট একটা ব্যবসা করছে এবং রিক্সা কেনার কথা ভাবছে। বর্তমানে আছিয়ার ভাই আছিয়াকে দেখা শুনা করছেন।